ফিফা বিশ্বকাপের জাদুতে ব্রাজিলের মতো আর কোনো জাতি এতটা মুগ্ধতা ছড়াতে পারেনি। “সেলেসাও” নামে পরিচিত এই দলটি বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল, যারা মোট পাঁচবার (১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৭০, ১৯৯৪ এবং ২০০২ সালে) শিরোপা জিতেছে। পেলের চোখধাঁধানো দক্ষতা থেকে শুরু করে রোনালদোর নিখুঁত ফিনিশিং ব্রাজিলের বিশ্বকাপ যাত্রা এক দুর্দান্ত নৈপুণ্য, আধিপত্য এবং স্মরণীয় মুহূর্তের গল্প।
1. 1958 – Sweden World Cup

ব্রাজিলের প্রথম বিশ্বকাপ জয় আসে ১৯৫৮ সালে, যখন মাত্র ১৭ বছর বয়সী পেলে বিশ্ববাসীর সামনে নিজের আগমনী বার্তা দেন। সেমিফাইনালে হ্যাটট্রিক এবং ফাইনালে স্বেডেনের বিপক্ষে দুটি গোল করে (৫-২ ব্যবধানে জয়) ব্রাজিলকে প্রথম অ-ইউরোপীয় দল হিসেবে বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দেন তিনি। এই জয় দিয়েই ফুটবলের এক মহান রাজবংশের সূচনা ঘটে।
Also Check: টুডে ক্রিকেট ম্যাচ প্রেডিকশন
2. 1962 – Chile World Cup

১৯৬২ সালে ব্রাজিল দেখিয়ে দেয় তাদের দলের গভীরতা, কারণ পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই তারা খেলেছে চোটে পড়া পেলের অনুপস্থিতিতে। তবে সেই আসরে আলো ছড়ান গারিঞ্চা, যিনি “জনতার আনন্দ” নামে পরিচিত। তাঁর দুর্দান্ত নৈপুণ্যে চেকোস্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে ৩-১ গোলের জয় পায় ব্রাজিল এবং টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জিতে তারা নিজেদের আধিপত্য আরও সুদৃঢ় করে।
3. 1970 – Mexico World Cup

১৯৭০ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিল ছিল তাদের সেরা ফর্মে। পেলে, জাইরজিনহো, রিভেলিনো, তোস্তাঁও এবং কার্লোস আলবার্তো এমন এক জাদুকরী ফুটবল উপহার দেন, যা আজও বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা দলীয় পারফরম্যান্স হিসেবে বিবেচিত। ফাইনালে ইতালিকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে সেলেসাও জিতে নেয় তাদের তৃতীয় শিরোপা। এই জয়ের মাধ্যমে তারা চিরতরের জন্য জুলে রিমে ট্রফি রাখার অধিকারও পায়।
Also Check: ক্রিকেট ও ফুটবল লাইভ ম্যাচ
4. 1994 – USA World Cup

২৪ বছর শিরোপা খরা কাটিয়ে ১৯৯৪ সালে নতুন রূপে ফিরে আসে সেলেসাও। সেই দলটি রক্ষণভাগের দৃঢ়তা আর আক্রমণভাগের সৃজনশীলতা দিয়ে গড়ে তোলে চ্যাম্পিয়নশিপ। রোমারিও ও বেবেতো ছিলেন আক্রমণের মূল ভরসা, তবে ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে ম্যাচটি গড়ায় টাইব্রেকারে বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনাল নির্ধারিত হয় পেনাল্টি শুটআউটে। গোলরক্ষক ক্লাউদিও তাফারেল নায়ক বনে যান, ব্রাজিল ৩-২ ব্যবধানে জিতে তাদের চতুর্থ শিরোপা অর্জন করে।
5. 2002 – Korea/Japan World Cup

২০০২ সালের বিশ্বকাপ ছিল রোনালদোর জন্য রূপকথার মতো এক গল্প। ক্যারিয়ার-ঝুঁকিপূর্ণ চোট থেকে ফিরে এসে তিনি দাপটের সঙ্গে শাসন করেন পুরো আসর। তাঁর আট গোল, যার মধ্যে ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে দুটি গোল ছিল, ব্রাজিলকে ২-০ ব্যবধানে জয় এনে দিয়ে পঞ্চম শিরোপা নিশ্চিত করে। রিভালদো, রোনালদিনহো ও কাফুর সঙ্গে রোনালদোর এই দলটিকে আধুনিক ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ও রোমাঞ্চকর দল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।