২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপ চিরকাল ফুটবল ইতিহাসে এক স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে স্মরণীয় থাকবে। রোমাঞ্চকর ম্যাচ, নাটকীয় প্রত্যাবর্তন, আর আবেগঘন বিদায়ের মধ্যে দিয়ে বিশ্বকাপের শ্রেষ্ঠত্বে পৌঁছায় আর্জেন্টিনা। কিংবদন্তি লিওনেল মেসির নেতৃত্বে ফ্রান্সকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জিতে নেয় তারা। এই জয়ের মাধ্যমে শুধু বিশ্বকাপই নয়, একাধিক রেকর্ডও নিজেদের করে নেয় আলবিসেলেস্তেরা।
১. আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা

এই জয়ে আর্জেন্টিনা ১৯৭৮ ও ১৯৮৬ সালের পর তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জিতে নেয়। ৩৬ বছর পর আবারো ফুটবলের শিখরে পৌঁছে তারা। কোচ লিওনেল স্কালোনির নেতৃত্বে অভিজ্ঞতা ও তরুণদের মিশ্রণে গড়া দলটি শুরুতেই সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হেরে ধাক্কা খেলেও পরবর্তী ম্যাচগুলোতে ঘুরে দাঁড়ায়। মেক্সিকো, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস ও ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে পৌঁছে যায় ফাইনালে। ফ্রান্সের বিপক্ষে উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনালে টাইব্রেকারে জিতে ইতিহাস গড়ে।
Also Check: টুডে ক্রিকেট ম্যাচ প্রেডিকশন
২. মেসির রেকর্ড গড়া বিশ্বকাপ

লিওনেল মেসির জন্য এটি ছিল ক্যারিয়ারের সবচেয়ে স্মরণীয় বিশ্বকাপ। তিনি একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের সব নকআউট রাউন্ডে (শেষ ১৬, কোয়ার্টার, সেমি ও ফাইনাল) গোল করেন। এছাড়া ২৬টি ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডও নিজের করে নেন, যা আগে ছিল লোথার ম্যাথাউসের। সাত গোল ও তিন অ্যাসিস্ট করে গোটা টুর্নামেন্টজুড়ে তিনি ছিলেন আর্জেন্টিনার সাফল্যের মূল কারিগর।
৩. এমিলিয়ানো মার্টিনেজের টাইব্রেকার নায়ক

আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ ছিলেন পেনাল্টি শ্যুটআউটের সত্যিকারের নায়ক। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস এবং ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সেভ করে দলকে জয়ের পথে রাখেন। তাঁর মনস্তাত্ত্বিক চাপ প্রয়োগের দক্ষতা এবং আত্মবিশ্বাস তাঁকে এনে দেয় গোল্ডেন গ্লাভস পুরস্কার।
Also Check: ক্রিকেট ও ফুটবল লাইভ ম্যাচ
৪. ইতিহাসের সেরা বিশ্বকাপ ফাইনাল

আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের মধ্যকার ফাইনাল বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনাল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অতিরিক্ত সময়সহ ম্যাচ শেষ হয় ৩-৩ গোলে। এমবাপে হ্যাটট্রিক করেন, যা ফাইনালে ১৯৬৬ সালের পর প্রথম। মেসি করেন দুই গোল। ম্যাচে ছিল গোল, নাটক, প্রত্যাবর্তন ও শ্বাসরুদ্ধকর পেনাল্টি শ্যুটআউট—সব মিলিয়ে এটি ছিল ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য উপহার।
৫. পরাজয়ের পরও টানা অপরাজিত
প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হারার পর আর্জেন্টিনা আর কোনো ম্যাচ হারেনি। পরবর্তী সব ম্যাচে তারা ছিল অপরাজিত। গ্রুপ পর্বে মেক্সিকো ও পোল্যান্ডকে হারিয়ে শীর্ষে থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে তারা।
- শেষ ১৬: অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারায়
- কোয়ার্টার ফাইনাল: নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে ২-২ ড্র, টাইব্রেকারে জয় (৪-৩)
- সেমিফাইনাল: ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলে হারায়
- ফাইনাল: ফ্রান্সের সঙ্গে ৩-৩ ড্র, টাইব্রেকারে জয় (৪-২)
এই ঐতিহাসিক জয় আর্জেন্টিনার ফুটবল ঐতিহ্যে একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত করেছে।